জেলা প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও: বিগত ১৬ বছরে হাসিনা সরকার যে ফ্যাসিবাদী নষ্ট সিস্টেমগুলি তৈরী করেছে, এই সিস্টেমগুলি বাংলাদেশে বর্তমান প্রজন্ম চায়না বলেই তাদের নেতৃত্বে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। যে হাসিনাকে আপনারা সকলে মিলে ১৬ বছর ধরেও পতন করাতে পারেননি, আমরা তা পেরেছি। গনঅভ্যুত্থানে ঠাকুরগাঁওয়ে শহীদ পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ শেষে গত ১৪ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় বড় মাঠ প্রাঙ্গনে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছাত্র নাগরিক মত বিনিময় সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে এসব কথা বলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সম্বন্বয়ক সারজিস আলম।
সারজিস আলম আরো বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের নির্বাচনের বিষয় নিয়ে বলা হয় যে, ঠাকুরগাঁওয়ে কে নির্বাচিত হবে তা নির্ধারণ করে আমাদের হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভাই বোনেরা। তাহলে নতুন স্বাধীনতার পর তাদেরকে কেন ওই ঠাকুরগাঁওয়ের সীমান্তের দিকে ঝুকতে হবে আর কেনই বা আপনাদের চলে যেতে হবে। আপনাদের এ দূর্বলতা আপনারা নিজেরাই সৃষ্টি করেছেন। কারন সারা জীবন আপনাদের ভোটটি একটি মার্কার জন্য ফিক্সড করে রেখেছেন। আপনি যখন একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ফিক্সড হয়ে যান তখন আপনার মূল্য কমে যায় এটাই স্বাভাবিক।
এখানে বালিয়াডাঙ্গিতে যে দবিরুল এমপিকে বারবার নির্বাচিত করেছেন সেই আপনাদের ভূমি দখল করেছে। শুধু তাতেই ক্ষান্ত থাকেননি। ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, মেম্বার সব জায়গাতেই তারা পরিবারতন্ত্র কায়েম করেছে। আমাদের এ ছাত্র জনতা পরিবারতন্ত্রকে কোনভাবেই মেনে নেয়না নেবেনা। আমরা স্পষ্ট করে একটা কথা বলতে চাই, বাংলাদেশের যা কিছু হবে তা ছাত্র জনতার রায় থেকে হবে, কোন পরিবারতন্ত্র থেকে না কোন ফ্যাসিবাদ সিস্টেম থেকে নয়। সীমান্ত হত্যা এবং পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে সারজিস বলেন, আমাদের চারপাশে যে সীমান্ত রয়েছে । আমাদের সেসব সীমান্তে ফেলানির মত আর কাউকে ঝুলে থাকতে দেখতে চাইনা। যদি আজকের পর থেকে এমন কোন ঘটনা ঘটে তাহলে হয় তাদের উপযুক্ত বিচার করতে হবে নাহলে বাংলাদেশে ছাত্র জনতা ওই রাষ্ট্র গুলোকে কিভাবে জবাব দিতে হয় তা আবার আমাদের দেখিয়ে দিতে হবে।
আমাদের সুনির্দিষ্ট বার্তা, আগামির বাংলাদেশের যে পররাষ্ট্রনীতি হবে তা হবে ছাত্র জনতার মতামতের ভিত্তিতে। আমরা কোন স্বামী-স্ত্রী পররাষ্ট্রনীতি চাইনা। সারজিস বলেন, আমরা যে রাষ্ট্র সংষ্কারের কথা বলছি তা আমাদের নিজ বাড়ি নিজ পরিবার থেকে করতে হবে। যে দালালরা অবৈধ ভাবে ইনকাম করছে তারা প্রত্যেকেই কেউ না কেউ আমাদের প্রত্যেকের পরিবারের অংশ। ফ্যাসিবাদি দালালি সিস্টেম গুলি যদি আমরা আমাদের পরিবার থেকে, আমাদের ঘর থেকে দূর করতে পারি তাহলেই আমরা রাষ্ট্র সংষ্কার করতে পারবো।
দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে সন্তানদের ভালো ডাক্তার , ইঞ্জিনিয়ার , পাইলট, জজ, ব্যারিষ্টার বানানোর পাশাপাশি ভালো মেধাবী রাজনীতিবীদ বানানোর মানসিকতা থাকতে হবে। আমাদের প্রতিটি জিনিস ওই সংসদ থেকে নির্ধারিত হয়। তাই ওই সংসদে আমাদের আপনাদের মত যোগ্য ব্যাক্তিরা বসতে না পারে তবে অথর্বরা বসে বিগত ১৬ বছরে আওয়ামীলীগ যে করাপটেড সিস্টেম তৈরী করেছে তার আবারো চিত্রায়ন দেখা যাবে।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রংপুর বিভাগীয় সমন্বয়ক মিশু আলী সুহাস, রকিব রানা মাসুদ সহ অন্যান্যরা। এছাড়াও মতবিনিময় সভায় ঠাকুরগাঁওয়ে নিহত এবং আহত পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।