জেলা প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁওঃ নিজ পতিত জমিতে বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষ হচ্ছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায়। বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষের সম্ভাবনা কিছুদিন আগে উন্মোচিত হলেও সমন্বিত পদ্ধতিতে আদা চাষের ঘটনা বিরল। ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাঁও হাবিবপুরের কৃষক মামুনুর রশিদ সেই সম্ভাবনাই সফল করে দেখিয়েছেন। বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষে অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হওয়ায় আশা ব্যক্ত করছেন স্থানীয়রা।
পরিত্যক্ত ৬৩ শতাংশ জমিতে বস্তা পদ্ধতিতে আদা, পেঁপে, হলুদ চাষ ও আমের বাগান কিরে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মামুনুর রশিদ। সমন্বিত চাষে কম খরচে বেশি লাভ হওয়ার আশায় খুশি এ কৃষক পরিবার।
সরেজমিনে দেখা যায় ৬৩ শতাংশ জমিতে ১৯০ টি ‘বানানা ম্যাংগো’ জাতের আম গাছের নিচে ৬০০টি উন্নতজাতের পেঁপে গাছ। থোকায় থোকায় ঝুলে আছে অনেক পেঁপে। প্রতি গাছে ন্যুনতম ২০-৩০টি পেঁপে ঝুলছে। গাছগুলোর উচ্চতা ৩-৪ ফুট। পেঁপে গাছ ও আম গাছের মধ্যকার স্থানে ৫৩০০ টি বস্তায় আবার আদার চাষ করা হয়েছে। অপর এক প্রান্তে আছে হলুদের চাষ।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজলো কৃষি কর্মকর্তা কৃষ্ণ রায় বলেন, আদা চাষের জন্য উপর্যুক্ত মাটি হলো বেলে বা বেলে-দোআশ। আর ঠাকুরগাঁওয়ের মাটি বেলে, বেলে- দোআশ হওয়ায় এখানে আদা বা আদার চারা বস্তা পদ্ধতিতে চাষ নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ হতে পারে।
কৃষক মামুনুর রশিদ বলেন, আমি কাজী ফার্মে চাকরী করি। চাকরির সুবাদে রংপুরে আমার এক বন্ধুর সাথে পরিচয় হয়। সেখান থেকে আদা বীজ ও পেঁপের চারা নিয়ে আসি। সেখান থেকে রোপণ করি। আলহামদুলিল্লাহ পেঁপে গাছের ফলন বেশ ভালোম সাথে আদার চারাও দারুণ হয়েছে। তবে আমি জমিতে যে পরিমাণ চাষ করবো তার চেয়ে অধিক পরিমাণ চারা উৎপাদন হওয়ায় কিছুটা শঙ্কায় আছি। কারণ বাজারজাত বা চারা বিক্রি করবো কোথায় এব্যাপারে আমার ধারণা ঠিক তেমন নেই।
তিনি আর বলেন, আমি যেমন চাকরির পাশাপাশি সমন্বিত চাষে আগ্রহী হয়ে কাজটা করেছি এবং সফল হইলাম। ঠিক সেভাবে বেকার তরুণেরা চাইলে পরিত্যক্ত জমি কিংবা আবাদী জমিতেও সমন্বিত চাষে ভালো একটা সম্ভাবনাময় সুযোগ তৈরি করতে পারবে। আমি তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো।
কৃষক মামুনুর রশিদের ছেলের মারুফের সাথে কথা হলে তিনি জানান, সবাই ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। কিন্তু আমি কৃষিবিদ হতে চাই। কারণ আমাদের ঠাকুরগাঁও ঐতিহ্য ও সম্ভাবনার এক জনপদ। এখানে আমাদের পরিত্যক্ত ও কিছু আবাদি জমিতে আমি বিভিন্ন প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করতে চাই এবং কৃষিতেই বাজিমাত করতে চাই।