ক্যাম্পাস প্রতিনিধি, হাবিপ্রবি: উদ্বোধনের ১ বছরের মধ্যেই অত্যাধুনিক সুবিধা সম্বলিত হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন-৪ এর (ড. মুহাম্মদ কুদরত-এ-খুদা ভবন) অধিকাংশ লিফট ব্যবহার অযোগ্য।
৩০ অক্টোবর (মঙ্গলবার) এগ্রিকালচার ২২ ব্যাচের ১৮ জন শিক্ষার্থী উক্ত বিল্ডিংয়ের একটি লিফটে আটকা পড়েন। কিছুসময় পর প্রক্টরের সহয়তায় তাদের নিরাপদে বের করা আনা হয়।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিকভাবে প্রয়োগমূলক গবেষণার জন্য গত ২০১৮ সালের ২৭মে এই ভবনের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করা হয়। ব্যয় নির্ধারন করা হয় ১০০ কোটি টাকা। যার নির্মাণকাজ শেষে উদ্বোধন করা হয় গত ১৪ ই নভেম্বর ২০২৪ সালে। নির্মাণ শেষে ব্যয় দাঁড়ায় ৯৭ কোটি টাকা।
স্বল্প পরিসরে ড. মুহাম্মদ কুদরত-এ-খুদা একাডেমিক ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হলেও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি শেষ হয়নি। প্রতিটি তলায় যাতায়াতের জন্য নির্মিত হয়েছে উন্নতমানের ৭ টি লিফট। কিন্তু সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় প্রায় সময়ই লিফটগুলো যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ থাকে। সচল লিফটগুলোতেও আটকে পরার কথা জানা যায়।
১০ তলা একাডেমিক ভবনের লিফট নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক শিক্ষার্থী পোস্ট করে বলেন, “হাবিপ্রবির ১০ তালা বিল্ডিংটা যেন একদম রোমাঞ্চকর ট্রেকিং স্পট! এখানে ৭টা লিফট আছে, কিন্তু চলে কেবল একটা-শিক্ষকদের জন্য। বাকি লিফটগুলো তো বন্ধ, আর যদি ভুল করেও চলে, তাহলে ভিতরে আটকে যাওয়া ফ্রি সার্ভিস! এত হাইটের বিল্ডিং, কিন্তু শেষমেশ আমাদের ভরসা দুটো-নিজের পা আর ভাগ্য। কারও যদি পাহাড়ি হাইকিংয়ের শখ থাকে, লিফটের খোঁজ না করে সরাসরি সিঁড়ির দিকেই রওনা দাও!”
শিক্ষার্থী আটকে পড়ার ঘটনায় প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো: শামসুজ্জোহা বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত এই ঘটনায় আটকে পড়ার খবর পেয়ে আমরা তাদের উদ্ধার করি। লিফটের রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য আমি ভিসি স্যারের সাথে কথা বলেছি। দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা রাখি।
ইন্জিনিয়ার শাখার পরিচালক মো: তরিকুল ইসলাম বলেন, এমন উদ্বেগজনক ঘটনার পিছনে শিক্ষার্থীদের অসহায়তাও দায়ী। লিফটে ১৫ জনের ধারণ ক্ষমতা হলেও শিক্ষার্থীরা নির্দেশনা অমান্য করে ধারণা ক্ষমতার অতিরিক্ত উঠে সাময়িক লিফটটি চলমান হলেও কিছুসময় পর আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়ে যায়। এছাড়াও পর্যাপ্ত রক্ষণাবেক্ষণ ও অপারেটরের অভাবও এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির জন্য দায়ী।
লিফট সংকট ও অব্যবস্থাপনার বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও কার্য বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো: মনিরুজ্জামান বাহাদুর বলেন, কোম্পানির সাথে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১ বছর মেয়াদী চুক্তি থাকে। সেই যুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। আমরা নতুন করে কোম্পানির সাথে চুক্তি বিষয়ে কথা বলছি। সাথে এই সংক্রান্ত কমিটিও ঘটনা করা হচ্ছে। খুব দ্রুতই লিফটগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শেষ করে চালু করার ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট জোরালোভাবে কাজ করবো।